Date: 2024-09-12
বাংলাদেশের মানুষকে প্রায়ই ভারী বর্ষণ অথবা উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হতে হয়। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সেই সাথে উদ্ধার ও ত্রাণ পৌঁচ্ছানোর কাজে উদ্ধারকর্মীদের ব্যাপক সমস্যায় পরতে হয়। প্রাণহানী কমাতে ও ত্রাণ কার্যক্রম সহজ করতে এবার আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (AUST) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ME) ও ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (EEE) শিক্ষার্থীরা রিমোর্ট কন্ট্রোলিং জলযান তৈরি করেছে। এই জলযানের মাধ্যমে যেকোনো দুর্গম এলাকায় প্রায় ৫০ কেজি ওজনের ব্যক্তিকে উদ্ধার করা যাবে। সেই সাথে প্রযোজনীয় খাদ্য, ওষুধ, পানীয় জল এবং ত্রাণ সামগ্রী পৌঁচ্ছানোও যাবে। এই জলযানের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রাণহানি কমানোর পাশাপাশি ত্রাণ সহায়তাও সহজ হবে। এই জলযানটির ডিজাইন করা হয়েছে মুলত বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য। তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তা ও উদ্ধারকর্মীর জীবনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে এই জলযান।
AIAA AUST স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের অধীনে মোট ১৭ জন শিক্ষার্থীর সহযোগী প্রচেষ্টায় এই জলযানটি তৈরি করা হয়েছে। AIAA AUST স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের চেয়ার আনাস আল রাফিন দ্বারা সূচিত এবং ছাত্রদের মিলিত অবদানের সাথে এই প্রকল্পটি বাস্তব-বিশ্বের সমস্যাগুলিতে প্রয়োগ করা প্রকৌশল জ্ঞানের মূল্যকে তুলে ধরে। জলযানটি
ক্যামেরা সেন্সর, অতিস্বনক সেন্সর (ultrasonic sensors) এবং তারবিহীন ট্রান্সমিটার দিয়ে সজ্জিত যা পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে এবং বন্যা-আক্রান্ত এলাকায় নিরাপদে চলাচল নিশ্চিত করে।
প্রকল্পটি যান্ত্রিক এবং উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগীয় অধ্যাপক ড. এএন মুস্তাফিজুল করিম এবং প্রফেসর ড. মাজহারুল ইসলামের পাশাপাশি ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (EEE) বিভাগীয় প্রফেসর ড. ববি বড়ুয়া এবং প্রফেসর ড. ওমর ফারুক-এর সহায়তায় পরিচালিত হয়েছে। AIAA AUST স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের অধীনে মোট ১৭ জন শিক্ষার্থীর সহযোগী প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছে। দলটি ভবিষ্যতে বন্যা ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য এটিকে আরও দক্ষ এবং মাপযোগ্য করতে ডিজাইনটিকে আরও বিকাশ এবং উন্নত করার পরিকল্পনা করেছে।
এ প্রসঙ্গে, আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল হক বলেন, আমাদের দেশ প্রাকৃতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবে মাঝে মাঝেই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়তে হয়। সেই সাথে বন্যা একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে ইদানিং। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা জলযান বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। দেশের মানুষের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আরও গবেষণামুলক কাজ করবে এমনটাই চাই। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।